ক্লাব ও সংগঠন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাব ও সংগঠন
দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিজ্ঞান চর্চা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সংস্কৃতি চর্চার ক্লাব গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ‘শিখন-শেখানো’ কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ তৈরিসহ দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকবে বিজ্ঞান ক্লাব, নাটকের ক্লাব, সাহিত্য ক্লাব, সংগীত চর্চার ক্লাব ও ডিবেট ক্লাবসহ ডজন খানেক ক্লাব। সহশিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার্থীর মেধাবিকাশ, মূল্যবোধ তৈরি, দায়িত্ব-কর্তব্য পালন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্ব গড়ে তোলা এবং তাদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে। শিক্ষার্থীদের একদিকে যেমন বিজ্ঞানমনস্ক করে তুলবে তেমনি মূল্যবোধসম্পন্ন অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে এই ক্লাব। তবে ক্লাবগুলোকে ‘অরাজনৈতিক’ ও ‘এলিট চর্চামুক্ত’ রেখে কার্যক্রম অব্যাহত রাখারও তাগিদ দেন তারা।
ক্লাব ও সংগঠনের প্রয়োজনীতা, উদ্দেশ্র ও গুরুত্ব
রোভার ও বিএনসিসি: সমাজের প্রতি দায়িত্বশীলতার প্রতিফলন ঘটে দুটি সর্বজন সমাদৃত সংগঠন বাংলাদেশ স্কাউটের রোভার সংগঠন এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের মাধ্যমে। সদা প্রস্তুত রোভারিংয়ের মাধ্যমে একজন দায়িত্বশীল স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিজেকে তৈরি করা যায়। জ্ঞান, শৃঙ্খলা, একতা—এই তিন মূলমন্ত্র নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রাথমিক সামরিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা আয়োজনে শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়ক হিসেবে এবং বিশেষ অতিথিদের গার্ড অব অনার দেওয়ার জন্য এই সংগঠন খুবই প্রতিশ্রুতিশীল।
বিতর্ক সংগঠন: নিজ মেধা ও যুক্তি প্রদানের ক্ষমতা শাণিত করার এক অনন্য উপায় নিজেকে একজন দক্ষ বিতার্কিক হিসেবে গড়ে তোলা। একটি বিতর্ক সংগঠন থেকে শুধু বিতার্কিক নয়, বরং নিজেকে দক্ষ সাংগঠনিক হিসেবেও তৈরি করা সম্ভব।
সাংবাদিকতার সংগঠন: বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সাংবাদিক সংগঠনগুলো প্রায়ই নানা প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। নিয়মিত নানা সাময়িকী, বার্ষিকী কিংবা ক্যাম্পাস পত্রিকা প্রকাশ করা হয়ে থাকে, যেখানে সাংবাদিকতার লেখনী শাণিত করার যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়।
ছায়া জাতিসংঘ সংগঠন: দেশের প্রায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতিসংঘের স্বীকৃত ছায়া জাতিসংঘ নামে একটি সংগঠন রয়েছে। জাতিসংঘের আদলে সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এই সংগঠন পরিচালিত হয়। বিশ্ব রাজনীতির পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার ওপরও ভালো দখল থাকা প্রয়োজন এই সংগঠনে সদস্য হিসেবে সুযোগ পাওয়ার জন্য।
সৃজনশীল সংগঠন : নাট্য-নৃত্য, সংগীত, কবিতা আবৃত্তি এবং চিত্রাকলা-সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোতে সুপ্ত প্রতিভা চর্চা এবং প্রকাশের সুবর্ণ সুযোগ থাকে। প্রয়োজন শুধু আগ্রহ এবং দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সংগঠনগুলোতে যুক্ত হওয়া।
ফটোগ্রাফি ও অ্যাস্ট্রোলজি: শুধু প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হতে চাইলেই যে ফটোগ্রাফি সংগঠনে যুক্ত হতে হবে এমন নয়, ফটোগ্রাফির প্রাথমিক জ্ঞান জীবনে চলার পথে অনেক কাজে আসে। এমন আরও একটি অভিনব সংগঠন হচ্ছে অ্যাস্ট্রোলজি সংগঠন। এই সংগঠনের কার্যক্রম কিছুটা ব্যয়বহুল হলেও এদের কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটা নতুন মাত্রা তৈরি করে।
অনুষদভিত্তিক সংগঠন: বিভিন্ন অনুষদভিত্তিক, যেমন বিজ্ঞান সংগঠন/সোসাইটি কিংবা বিভাগভিত্তিক যেকোনো সংগঠন, এসব সংগঠনের নির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা থাকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এসব সংগঠন প্রায়ই নানান সামাজিক দায়িত্ব পালন করে থাকে।